সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

অক্টোবর, ২০২২ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

নোয়াখালী হিন্দু গণহত্যা ১০ অক্টোবর ১৯৪৬। জ্যোতির্ময়ী দাস, রমানাথ দাসের স্ত্রীর জবানবন্দী

নোয়াখালী হিন্দু গণহত্যা ১০ অক্টোবর ১৯৪৬ জ্যোতির্ময়ী দাস, রমানাথ দাসের স্ত্রীর জবানবন্দী তারিখ ৩১/১০/১৯৪৬ লক্ষ্মীপূজার দিন শুক্রবার বেলা ১০টার সময় প্রথমে বহুলােক টেটা, বল্লম, দুটো বন্দুক নিয়ে আসে, তখন আমরা মেয়েরা সকলেই ছাদের উপরে উঠি। তখন দুবৃত্তরা চারিদিকে আগুন লাগাইয়া দেয়। মণীন্দ্রবাবু, কানু রায় (প্যারী রায়ের ছেলে) দুজনে গিয়ে মাপ চাইতে যায় এবং মাপ চাইতে না চাইতেই মণিকে নিয়াই কাটিয়া ফেলে, কানুর বুকে বল্লম মারে। তারপর অনর্গল ইট-বর্ষণ হয় এবং বর্ণনাকারিণীর চোখের উপরেই ইট লাগে। তারপর ছাদের উপর হইতে পুরুষ ও মেয়েরা মাপ চাইতে থাকে। দুর্বত্তরা নীচু হইতে অস্ত্র শস্ত্র ছুড়িয়া মারিতে সকলেই ছাদের উপরে শুইয়া পড়ে। সকলেই অল্পবিস্তর আহত (হন) এবং উঠিয়া মার্জনা প্রার্থনা করে যে আমাদের মারবেন না, যা চান বলুন আমরা দিতেছি। তাহাতে জনতা বলে তােমরা আগে নামিয়া এসাে। তখন মেয়েরা বলেন যে চারিদিকে আগুন জ্বলিতেছে আমরা কেমনে নামিব। তখন নীচু হইতে নারিকেল গাছ কাটিয়া উপরে উঠিয়া বলে মু$লমান হবি কিনা? আমরা অনেকেই স্বীকার করি, এবং দাবি (করি) যেন আমাদের উপরে কোন অত্যাচার করা না হয়। তখন তাহারা বলে যে...

নোয়াখালী ম্যাসাকার ও তখনকার মিডিয়ার ভূমিকা - সুষুপ্ত পাঠক

নোয়াখালী ম্যাসাকার ও তখনকার মিডিয়ার ভূমিকা -সুষুপ্ত পাঠক ১৯৪৬ সালের ১০ অক্টোবর কোজাগরী পূর্ণিমা লক্ষ্মিপুজার রাতে নোয়াখালীতে ভয়ংকর হিন্দু ম্যাসাকারের কোন নিউজও পূর্ব পাকিস্তানের কোন খবরের কাগজ প্রকাশ করেনি। সর্ব প্রথম নিউজ প্রকাশ করে ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি পরিচালিত দৈনিক স্বাধীনতা পত্রিকা। পূর্ববঙ্গের প্রাদেশিক হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সরকার পুরো ঘটনাকে তুচ্ছ, স্থানীয় বিবাদ হিসেবে আখ্যা দেন যখন কোলকাতা থেকে প্রকাশিত দৈনিকগুলিতে নোয়াখালীর নিউজ আসতে থাকে। তখন ঢাকা থেকে প্রকাশিত ইংরেজি দৈনিক মর্নিং নিউজ লেখেন, তুচ্ছ ঘটনাকে ‘হিন্দুদের প্রকাশিত পত্রিকায়’ বড় করে দেখানো হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রকাশিত খবরের কাগজের এ সময়ের কিছু শিরোনাম দেখে নেয়া যাক- ‘দৈনিক যুগান্তর’   ‘নোয়াখালীতে পাঁচ সহস্রাধিক নিহত ও অর্ধলক্ষাধিক বিপন্ন’ একই নিউজে  একাধিক উপশিরোনাম ছিলো: ‘চাঁদপুর শহরের দিকে উন্মত্ত আক্রমণকারী দল’ ‘মহকুমার সর্বত্র ব্যাপক হত্যাকাণ্ড ও গুণ্ডামী’ ‘কংগ্রেসী নেতৃবৃন্দের বিমানযোগে উপদ্রুত অঞ্চল পরিদর্শনের ব্যবস্থা’। আরেকটি নিউজ এই পত্রিকায় প্রকাশিত হয় গুরুত্ব দিয়ে, ‘নোয়াখাল...

কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা-১৯৪৬: নোয়াখালীতে লাখো হিন্দুর রক্তে রঞ্জিত ইতিহাস - রাজেশ পাল

আজ লক্ষ্মীপূজো। বাঙালি হিন্দুরা আজ ঘরে ঘরে ব্যস্ত লক্ষ্মীর ঝাঁপি সাজানো আর আলপনা দিয়ে মেঝে রাঙানোর কর্মব্যস্ততায়। সবার মনে একই প্রত্যাশা , সুখে শান্তিতে ধনে সম্পদে যেন ভরে উঠে নিজেদের ছোট্ট গৃহকোণ। ১৯৪৬ সালেও তাই করেছিলো নোয়াখালীর হিন্দুরা। ১৯৪৬ সালের অক্টোবর মাসের ১০ তারিখ।দিনটি ছিল কোজাগরী লক্ষ্মী পূজার দিন। নোয়াখালীর হিন্দুরা বাড়িতে পূজার আয়োজনে ব্যস্ত।অন্যদিকে মুসলিম লীগ নেতারা তখন ব্যস্ত মিথ্যা সংবাদ আর গুজব রটাতে। তারা চারিদিকে গুজব ছড়িয়ে দেয় যে,শিখ সম্প্রদায় দিয়ারা শরীফ আক্রমণ করেছে। বাতাসের আগে ছড়িয়ে পড়া গুজবের ফলে আশে পাশের এলাকার মুসলিম লীগের গুণ্ডারা দলে দলে দিয়ারা শরিফে জড়ো হতে শুরু করে। গোলাম সরোয়ার হুসেনি সমবেতদেরকে সাহাপুর বাজার আক্রমণ করতে নির্দেশ দেয়।কাশেম নামের আরেকজন মুসলিম লীগ নেতাও তার নিজস্ব বাহিনী নিয়ে সাহাপুর বাজারে পোঁছায় যাদেরকে "কাশেমের ফৌজ" বলা হত। কাশেমের ফৌজ নারায়ণপুর থেকে সুরেন্দ্রনাথ বসুর ‘জামিনদার অফিসের’ দিকে এগিয়ে যায়। কল্যাণনগর থেকে আসা আরেকদল দাঙ্গাবাজ দল কাশেমের ফৌজের সাথে যোগ দেয়।এদের সাথে আরও অনেক ভাড়া করে আনা মুসলি...