সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

১৯ আগষ্ট ২০২২ জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা'র বক্তব্য

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৯ আগষ্ট জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে বক্তব্য দিয়েছেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা অনেক আশা নিয়ে ছিলাম তিনি সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় এবং সংখ্যালঘু কমিশন প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ঘোষণা দেবেন।
এটি ছিলো আওয়ামীলীগের নির্বাচনী ওয়াদা। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে আমরা দেখলাম তিনি এব্যাপারে কোনো ঘোষণা দিলেন না।
বক্তব্যের শুরুতে তিনি ১৫ আগষ্টের কালো রাতে যারা মৃত্যুবরণ করেন তাদের কথা স্মরণ করেন। ১৫ই আগষ্ট কালো রাতে খুনীরা শুধু বঙ্গবন্ধুকে খুন করে নাই, পুরো পরিবারকে নৃশংসভাবে খুন করেছিলো পাকি প্রেত্মারা। শুধু তাই নয় যেসব ব্যক্তি এবং পরিবার এই নৃশংস ঘটনার বিপরীতে গর্জে উঠতে পারে তাদেরকেও স্বপরিবারে খুন করেছিল। এরপর আমরা দেখেছি ৪ নেতাকে খুন করেছিলো শয়তানরা। আমি বিশেষভাবে কর্ণেল জামিলকে স্মরণ করতে চাই- যিনি একমাত্র ব্যক্তি কারো অপেক্ষায় না থেকে একাকী ছুটে গিয়েছিলেন ধানমন্ডিতে। এবং তিনিও সেই নৃশংস ভাগ্য বরণ করেছিলেন।

এই ঘটনাগুলো আমরা জানি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এত বছর পরেও সে ঘটনা স্মরণ করে বার বার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এহেন ঘটনায় তিনি যদি ব্যথিত হন, তিনিই তো সর্বোচ্চ বোঝার কথা হিন্দুদের বাড়ি-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, দেবালয়ে আক্রমণ, খুন, শারীরিক নিগ্রহ, সামাজিক ঘৃণার চাষাবাদের শিকার হলে কেমন অনুভুতি হয়।
কিন্তু এই সরকারের শাসনামলে আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে দেখেছি- এই ঘটনাগুলো যখন ঘটে তখন ত্বরিৎ ব্যবস্থা নেয়া হয় না, সুবিচার হয় না। যদিও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- এধরনের ঘটনা ঘটার পরে সরকার দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন। কিন্তু এই তথ্যের স্বপক্ষে শক্ত কোনো নজির নেই। কিছু মানুষকে ধরা হয়, বিচারের দীর্ঘসূত্রিতায় তারা একপ্রকার স্বাধীন জীবন যাপন করে। এছাড়াও আমরা দেখেছি বেশিরভাগ ঘটনার সাথে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। কোনো ঘটনারই আমরা দ্রুত এবং কঠোর কোনো শাস্তি দিতে দেখিনি। বরং অনেককে আমরা দেখেছি পরবর্তী নির্বাচনে তাদের নমিনেশন দিতে বা আরো বড় পদ দিতে। এর ফলে দিন দিন হিন্দুদের উপর আক্রমণ বেড়েই চলেছে। আমরা এই মাটির ভূমিপুত্র। সেখানে এই দেশের সংবিধানে পরোক্ষভাবে আমাদেরকে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক বানানো হয়েছে।
এছাড়া একাত্তর টিভি নিউজে দেখলাম, প্রধানমন্ত্রী বলেন, "নিজেদের মতো করে ধর্ম পালন করবে সবাই। তবে কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে কোন কথা বলা ঠিক নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।"
এই কথা তিনি কাদের উদ্দেশ্যে বললেন আমি স্পষ্ট নই। আমার ধর্ম পালন এবং আমাদের হাজার বছরের রীতিনীতি যদি কারো ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত লাগে সেক্ষেত্রে আমাদের করণীয় কি?? আমরা কি মুর্তি পূজা বাদ দেবো? আমরা কি নাচ-গান বাদ দেবো?? আমরা কি সিঁদুর পরা বাদ দেবো? অপরদিকে প্রতিনিয়ত ওয়াজসহ, সামাজিক মাধ্যমে দেদারসে হিন্দুদের এসব ব্যাপারে বিদ্বেষমূলক প্রচারণা চালানো হয়। এমনকি আজ দেখলাম একটি ছোট্ট বাচ্চা যে কিনা মাত্র পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে সে ক্রিকেটার সৌম্য সরকারের সাথে কথা বলতে চায় না, কারণ সৌম্য হিন্দু!!! এই বাচ্চা এই জ্ঞান কোত্থেকে পেলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী?? আবার হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহবান করেছেন, নিজেদের সংখ্যালঘু না ভাবতে । এই কথার তাৎপর্য কি?
স্বদেশে জনশুমারীতে হিন্দুদের সংখ্যা যতই কমুক, যতই নির্যাতনের ঘটনা ঘটুক, বিলুপ্ত না হওয়া পর্যন্ত পিতৃভূমিতে সংখ্যালঘু হয়ে পড়া এই জাতির "সংখ্যালঘু" স্বীকৃতি এই সরকার দেবে না!! সুতরাং জাতিসংঘ স্বীকৃত সংখ্যালঘুদের প্রদেয় কোনো সুযোগ-সুবিধা হিন্দুরা ও আদিবাসীরা পাবেন না। মানে, সরকার দিতে নারাজ। সরকারের ভাষ্য হলো, আপনারা সমান সুযোগ-সুবিধা ও অধিকার ভোগ করবেন। হা হা হা। সরকার নিজেই কতটা বৈষম্য করেন সেটা কি আমরা বুঝি না? বাজেট বিশ্লেষণ করলে সেটা স্পষ্ট।

আওয়ামী লীগ তার নির্বাচনী ইশতেহারেও সংখ্যালঘু বিষয়ক কমিশন ও সুরক্ষা আইনের অঙ্গীকার করেছিল। এখন ক্ষমতায় বসে বলেন, নিজেদের সংখ্যালঘু ভাববেন না। চার বছর পার হতে চললো, কোনো সাড়াশব্দ নেই। অর্থাৎ হিন্দুদের দাবি-দাওয়া ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চার মতো লাফালাফিই সার হবে।

আসলে এই ১২/১৩ বছরে বাংলাদেশের সংবিধানের যে চার মূলনীতি তথা স্বাধীনতা চেতনার বাস্তবায়নে কি করলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী??

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার আব্দুল ও’রকম নয় (লাভ জিহাদ)

সন্দেহজনক উপায়ে সনাতনী ছেলে বা মেয়েদের প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে ধর্মান্তর করা, পরবর্তীতে বিয়ে করাকে লাভ জিহাদ বলে। আমাদের কাছে যেসব তথ্য আছে তাতে আমরা জেনেছি, রীতিমতো বৈদেশিক পয়সা আসে এই জেহাদি কাজের জন্য। সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী অংকন বিশ্বাস এর অকাল মৃত্যুতে এই বিষয়টি প্রবলভাবে সামনে এসেছে। একটি মধ্যবিত্ত শিক্ষিত হিন্দু পরিবারে বেড়ে ওঠা একটি ছেলে এবং একটি মেয়ের মনোজগতের মধ্যে হাজার মাইলের তফাৎ আছে। একটি ছেলে বোধ হবার পরই সে উপলব্ধি করে সে যতটুকু মানুষ তার অধিক সে হিন্দু। উঠতে বসতে ঘরে বাইরে সর্বত্র তার চারপাশের মানুষ তাকে বুঝিয়ে দেয় সে হিন্দু এবং একজন দ্বিতীয় শ্রেণির মানুষ। ওই একই পরিবারের একটি মেয়ের জীবন হয় ঠিক উল্টো। উঠতে বসতে চারপাশের মানুষ তাকে বুঝিয়ে দেয় সে হিন্দু এবং একারণেই সে অধিক আদরণীয়। বাবা মা মেয়ের প্রতি বিশেষ নজর দেয়। এই বিশেষ নজর রাখা ২ রকমের হয়। অধিক শাসনে রাখা, বাবা-মা এর সাথে মানসিক দুরত্ব সৃষ্টি হয়। আরেক রকম হচ্ছে মেয়ে যা বলে তাতেই সায় দেয়া। মেয়ে উচ্ছন্নে গেলেও আধুনিক হিন্দু বাবা-মা তাতে তাল দেন। অন্যদিকে বাইরের দুনিয়ায় সে একেবারে রাজেন্দ্রাণির মত...

যুক্তিফাঁদে ফড়িং - চমক হাসান

ডিসক্লেইমারঃ চমক হাসানের লেখা অসাধারণ একটা বই এটি। খুব সহজভাবে যুক্তি, ভ্রান্তি নিয়ে লেখা যা প্রতিটি হিন্দু তথা সকল মুক্তবুদ্ধির মানুষের জন্য অবশ্যপাঠ্য। এখানে এই বইটি উম্মুক্ত করা হয়েছে শুধুমাত্র বাংলাদেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে।  চারিদিকে সাম্প্রদায়িক শক্তির হুংকার দেখা যাচ্ছে। তারা তাদের বিষাক্ত নখ, দাঁত দিয়ে বাংলাদেশকে প্রতিনিয়ত ক্ষত বিক্ষত করছে। এই সাম্প্রদায়িক শক্তি যেসব অস্ত্র দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে তার একটি বড় অস্ত্র হলো এই ভ্রান্তি'র ব্যবহার। ইংরেজিতে যাকে ফ্যালাসি বলে। এটা পড়লে মোটা দাগে কোনটা সুযুক্তি আর কোনটা কুযুক্তি সেটা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পাবেন।  [চমক হাসান ভাই যদি কোনোদিন এই সাইট দেখেন, আপনার ঔদার্যের গুণে ক্ষমা করবেন।] গল্প শুরুর আগে ভ্রান্তি চারিদিকে আন্তনগর মধুমতী এক্সপ্রেস ট্রেনের ভেতরে বসে আছে হাসিব, গন্তব্য 'খোকসা'। ঢাকা থেকে বাসে করে আসা যেত, তাতে সময় অনেক কম লাগত। তবু সে ট্রেনেই আসবে ঠিক করেছিল। ট্রেনে চড়লে নাকি একটা আয়েশি ভাব আসে ওর, ট্রেনের ছন্দ আর দুলুনিতে মনটা খুশি খুশি লাগে। তা ছাড়া স্টেশনে স্টেশনে মানুষের ওঠানামা দেখতে ভালো লাগে। আর...

মুক্তিযুদ্ধে হিন্দুদের আত্মত্যাগ

কয়েকজন বোধহীন বুদ্ধিমান রাজনৈতিক নেতাদের অবিমৃষ্যতার কারণে ১৯৪৭ সালে ভারত ভেঙ্গে পাকিস্তান হলো। দেশ ভাগ হবার আগ-পর যেসব হিন্দু ব্যক্তিবর্গ পাকিস্তান অংশে ছিলেন তাদের বড় একটা অংশ সহায় সম্পত্তি ফেলে পশ্চিম বাংলায় চলে গেলেন। ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের মতো কিছু ব্যক্তি পূর্বপুরুষের ভুমি আঁকড়ে ধরে মাতৃভূমির মানুষদের সাথে নিয়ে বাঁচতে চাইলেন। আবার অন্যদিকে যোগেন মণ্ডলের মতো নেতারা উচ্চবর্ণের হিন্দুর থেকে মুসলিমরা শ্রেয় এই মূঢ় তত্ত্বে বিশ্বাস করে জিন্নাহ’র সাথে গাট বাঁধলেন। আদতে ভারতবর্ষের হিন্দুরা কখনো একতাবদ্ধ ছিলো না- যার কারণে ইরান, তুরান, মোগল, মঙ্গোল, সাত সাগরের পার থেকে বিভিন্ন হানাদাররা এসেছে আর এদেশ শাসন করেছে। ইংরেজরা যখন এদেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে তখনো সনাতনীদের কোনো একক দল গড়ে ওঠেনি, নিজেদের মধ্যে কোনো ঐক্য নেই। সেসময় মুসলিমরা মোটা দাগে সবাই মুসলিমলীগের সাথে থাকলেও হিন্দুদের তেমন কোনো গ্রহনযোগ্য দল ছিলো না। হিন্দুদের কেও বাম, কেও কংগ্রেস ইত্যাদি রাজনৈতিক দলে বিভক্ত ছিলো। ১১ আগষ্ট ১৯৪৭ তারিখে পাকিস্তান এসেম্বলিতে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া প্রথম ভাষণে জিন্নাহ বললেন, “Now I think we should keep ...

দিব্যজ্ঞান নয় কাণ্ডজ্ঞান চাই, শিবপ্রসাদ রায়

দিব্যজ্ঞান নয় কাণ্ডজ্ঞান চাই, শিবপ্রসাদ রায় ছোটোবেলায় একটা বই পড়েছিলাম, নাম “বুদ্ধিতে যার ব্যাখ্যা চলে না।” বড় হয়েও এদেশের বহু ঘটনার বুদ্ধি দিয়ে ব্যাখ্যা করতে পারছি না। মনে হচ্ছে গোটা দেশের ভাবনা-চিন্তাগুলো যেন একটা অবাস্তব ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে। অবিলম্বে যদি আমরা বাস্তবের মাটিতে পা না রাখতে পারি, আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে চরম সর্বনাশ। এদেশের অর্থনৈতিক বিপর্যয় এবং মনুষ্যত্বের অবক্ষয়ের জন্য দায়ী করা হয় ভারত বিভাগকে। এই ভারত বিভাগ ছিল এদেশের তাবৎ হিন্দু নেতৃবৃন্দের নির্বুদ্ধিতার পরিণতি। শতকরা সাতানব্বই জন মুসলমানের দাবী ছিল : হিন্দু মুসলমান দুটো পৃথক জাতি। হিন্দুর সঙ্গে পাশাপাশি বাস করে মুসলমানদের ধর্ম সংস্কৃতি অক্ষুণ্ণ রাখা অসম্ভব। অতএব আমাদের একটা হোমল্যান্ড চাই, যার নাম পাকিস্তান। মুসলমান সমাজের পুরোটাই যখন ভারতবর্ষকে দুখণ্ড করতে ব্যস্ত, তখন হিন্দু নেতারা কি করছিলেন? জনগণকে বোঝাচ্ছিলেন, হিন্দু মুসলমান পৃথক জাতি নয়। এক জাতি, ভারতীয় জাতি। মুসলীম লীগ এবং মহম্মদ আলি জিন্নার দ্বিজাতিতত্ত্ব এবং পাকিস্তানের দাবী সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। মহাত্মা গান্ধী বললেন : ভারত দ্বিখণ্ডিত হলে তা আমা...

বর্তমান হিন্দু-মুসলমান সমস্যা - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

১৯২৬ সালে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় একটি ভাষন দেন যার নাম “বর্তমান হিন্দু মুসলমান সমস্যা”। এটি বাঙলা প্রাদেশিক সম্মেলনে প্রদান করেন। পরে তা হিন্দু সংঘ পত্রিকায় ছাপা হয় ১৯ শে আশ্বিন ১৯৩৩ সালে। পাঠকদের বলবো মনোযোগ দিয়ে পড়ুন এবং ভাবুন।  ------- কোন একটা কথা বহু লোকে মিলিয়া বহু আস্ফালন করিয়া বলিতে থাকিলেই কেবল বলার জোরেই তাহা সত্য হইয়া উঠে না। অথচ এই সম্মিলিত প্রবল কণ্ঠস্বরের একটা শক্তি আছে এবং মোহও কম নাই। চারিদিক গমগম করিতে থাকে—এবং এই বাষ্পাচ্ছন্ন আকাশের নীচে দুই কানের মধ্যে নিরন্তর যাহা প্রবেশ করে, মানুষ অভিভূতের মত তাহাকেই সত্য বলিয়া বিশ্বাস করিয়া বসে। Propaganda বস্তুতঃ এই-ই। বিগত মহাযুদ্ধের দিনে পরস্পরের গলা কাটিয়া বেড়ানই যে মানুষের একমাত্র ধর্ম ও কর্তব্য, এই অসত্যকে সত্য বলিয়া যে দুই পক্ষের লোকেই মানিয়া লইয়াছিল, সে ত কেবল অনেক কলম এবং অনেক গলার সমবেত চীৎকারের ফলেই। যে দুই-একজন প্রতিবাদ করিতে গিয়াছিল, আসল কথা বলিবার চেষ্টা করিয়াছিল, তাহাদের লাঞ্ছনা ও নির্যাতনের অবধি ছিল না। কিন্তু আজ আর সেদিন নাই। আজ অপরিসীম বেদনা ও দুঃখ ভোগের ভিতর দিয়া মানুষের চৈতন্য হইয়াছে যে, সত্য বস্তু সেদিন...

রক্তাক্ত শারদ’ ২০২১

রক্তাক্ত শারদ’ ২০২১ (১) ২০১৬ সালে ব্রাহ্মনবাড়ীয়া পবিত্র কাবা শরীফের উপর মহাদেবের ছবি বসানোর অজুহাতে রসরাজের বাড়ী সহ সেখানে বেশ কয়েকটি হিন্দু বাড়ী তছনছ করা হয়েছিল, কিন্তু প্রকৃত ধর্ম অবমাননাকারী ধরা পড়ার পর দেখা গেলো সে লোক একজন মুসলিম ধর্মাবলম্বী। প্রকৃত ধর্ম অবমাননাকারী ধরা পড়ার পর ঐ মুসলিম দুস্কৃতিকারী মানুষটার উপর আগ্রাসী ঐ মানুষ গুলোর কোন প্রতিক্রিয়া কিন্তু লক্ষ্য করা যায়নি। (২) ১৫ মার্চ ২০১৭ বাংলাদেশের দাউদকান্দির হিন্দু পাড়া সংলগ্ন এক মাদ্রাসায় রাতের অন্ধকারে প্রায় ১৬টি কোরান হাদিসের উপর মল ত্যাগ করা হয়েছে – এই খবর যখন চাউর করে সন্দেহের তীর পাশের হিন্দু বাড়ী গুলোর দিকে দেয়া হয়েছিলো, পরে যখন হাবিবুর রহমান ও তার দুই মুসলিম বন্ধু পুলিশি অভিযানে ধৃত হয় ও স্বীকারোক্তি দিয়ে এধরনের জঘন্য কাজের দায় নিজে নেয়ার পরও কোন মুসলিম ধার্মিক গোষ্ঠী হাবিবুর রহমান ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে এ্যাকশনতো দূরের কথা বিচারের জন্য কোন দাবীও করে নাই। (৩) পুরান ঢাকায়, মুসলিম ছেলেরা হিন্দু সেজে মুসলিম হিজাবী মেয়ের গায়ে মুখে আবির দেয়, শ্লীলতাহানি করে –এই কর্ম করে ধরা পড়া মুসলিম ও যুবকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্...

‘মেরুদণ্ডহীন’ হিন্দু সম্প্রদায় ও ‘সাম্প্রদায়িক’ বাংলাদেশ - চিররঞ্জন সরকার

তিনি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। ফোনে যখন আলাপ হচ্ছিল, তখন ঝাঁজালো কণ্ঠে বললেন, “কী-যে সব প্যানপ্যানানি লেখা লেখেন। এসব বাদ দ্যান। পারলে শক্ত করে লেখেন। না হলে লেখালেখি বাদ দেন। আর লিখেই-বা কী লাভ? রাস্তায় নামতে পারেন না? অস্তিত্ব হুমকির মুখে, আর আপনারা চুপচাপ বসে আছেন। আপনাদের পরিণতিও একসময় রোহিঙ্গাদের মতো হবে।” উনি এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে গেলেন। আমি শুনলাম। এই কথাগুলো যে আমি বুঝি না বা দেশের হিন্দুরা বোঝে না, তা তো নয়। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে কী-ই-বা বলার বা করার আছে? এদেশে হিন্দুদের যা পরিস্থিতি– যেভাবে অপমান-নির্যাতন-হামলা চালানো হচ্ছে– রাষ্ট্র, সরকার, প্রশাসন, রাজনৈতিক দল, সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ যে আচরণ করছে– তাতে হিন্দুদের মার খাওয়া ছাড়া, মেনে নেওয়া ছাড়া, বিলাপ ও চোখের জল ফেলা ছাড়া, দগ্ধ হওয়া ছাড়া, ‘গোপনে দেশত্যাগ’ ছাড়া আর কী-ই-বা করার আছে? হ্যাঁ, হিন্দুরা যা করতে পারে, যা করতে পারত, যা করা উচিত ছিল তা হল, ‘প্রতিরোধ’ গড়ে তোলা। কিন্তু এদেশে বসবাসকারী হিন্দুরা, আমাদের পূর্বপ্রজন্মের নেতারা (হিন্দু-নেতারা, ‘হিন্দু-নেতা’ শব্দটি ব্যবহার করতে বিবেকে বাধছে, কিন্তু উপায় কী) সঠিক সময়ে সঠ...