লিখেছেন Prithwi Sen
বাস দাঁড়িয়ে গেল প্রায় 6 কিমি আগে
সেখান থেকে auto আর cng বাস নিয়ে গেল তাজমহলের গেট অব্দি। এবারে লম্বা লাইন আমরাও দাঁড়িয়ে গেলাম।
যেমন রোদ আছে তেমনি গরম, দুয়ে মিলে পুড়ে যাবার জোগাড়।
শেষে এল আমাদের security চেক।
কিছু খাবার ছিল ব্যাগে এই বিস্কুট চানাচুর। শুরু হল সমস্যা, এগুলো নিয়ে ভেতরে প্রবেশ নিষেধ। এখন আবার আরেকটা লাইনে দাঁড়িয়ে লকারে রেখে আসতে হবে এগুলো।
কি করা যায় এখন, দেখলাম কয়েকটা হনুমান রয়েছে দূরে...
ধুত্তোর নিকুচি করেছে, বলে প্যাকেট গুলো সামনে রেখে দিলাম ওদের। এসে নিয়ে গেল ওরা। সব সমস্যার শেষ।
ওয়াহ তাজ:
◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆
যাইহোক মূল গেট পেরুলাম
এবারে মূল চত্ত্বরে প্রবেশ ঘটল। মাঝে রাস্তা দুদিকে সবুজ লন। একটু এগোতেই বামদিকে প্রকাশ পেতে লাগল তাজমহল একটু একটু করে। প্রথমে পাশের মিনার গুলো আর তারপরে এল মূল কক্ষ, আর তারপরে পুরোটা।
একটা বাঁক নিলাম বামদিকে।
বাহ অদ্ভুত অপূর্ব...
বিস্ময়ে হতবাক করে দেয় এই সৌন্দর্য্য। অপূর্ব একখন্ড বিস্ময় যেন পৃথিবীতে নেমে এসেছে। এক টুকরো স্বর্গীয় পরিবেশ, মাঝখানে #যমুনা লম্বা হয়ে চলে গেছে তাজমহল অব্দি।
একদম ঠিক সামনে
বসার জায়গা। বসে পড়লাম।
ফটো তুলছে বহু লোকজন। দেশি বিদেশি পর্যটক ভর্তি।
কিন্তু ভ্রূক্ষেপ নেই আমার কারুর দিকে।
দেখছি অবাক বিস্ময়ে একমনে এই অদ্ভুত সৃষ্টি'কে।
সূর্য্যের পড়ন্ত দুপুরের আলোয়
সেই সাদা রূপ যেন ফেটে বেরুচ্ছে।
সামনের এই বেঞ্চের থেকে সরে যেতে যেন মন চাইছেই না।
মাঝের যমুনাকে পাশে রেখে
আমরা এগিয়ে গেলাম তাজমহলের দিকে। যত এগোচ্ছি তত যেন সুন্দর হচ্ছে এই তাজমহল।
সামনের পর পর লম্বা শ্বেত শুভ্র সিঁড়ির কাছে চলে এলাম। এবারে ওঠার পালা।
উঠে এসে একবার চারপাশ দেখলাম, আহা কি দুর্দান্ত। যেমন সাজানো বাগান চারিদিকে আর গেটগুলি, মাঝে লম্বা করে যমুনা। যেদিকে তাকাই চোখ সরানো মুশকিল। সিঁড়ি দিয়ে উঠতেই সামনের বড় বারান্দায় এদিক থেকে ওদিক হেঁটে একবার দেখে নিলাম মূল কক্ষের সামনেটা।
মূল কক্ষে ভীড় কমেছে
এবারে ওখানে যাই। বেশ সাজানো কক্ষ নিচে, দুটি বাক্স পরপর। এগুলো কবর মমতাজ শাজাহানের।
উপরে জাফরির কাজ করা সেখান থেকে আলো আসছে।
উপরে বেশ একটা গোল নকশা, দেখলে এক ঝটকায় সূর্যচিহ্নের মতোই লাগে। আলো আসছে ওই জায়গা দিয়ে।
দুইটি বাক্স। কবরের উপরি ভাগটা শুধু দেখা যায়।
যেগুলো শুধুই বাক্স, আসল কবর রয়েছে নিচের ঘরে।
কিন্তু
সেই কবরকে ঘিরে রয়েছে উপরে পরিক্রমা ব্যালকনি, কেন এই ব্যালকনি?
কবর ঘিরে ব্যালকনি... অদ্ভুত
বেরিয়ে এসে মিনার গুলোর কাছে গিয়ে বসলাম। অনেকে প্রাচীরের উপরে উঠে যমুনা দেখছে।
যমুনার ওদিক থেকে আরেকটি গেট রয়েছে,
যদিও সেটি এখন বন্ধ থাকে।
তাজমহল যেদিকে থেকে দেখবেন
সেদিক থেকেই এটি একইরকম দেখাবে।
কিন্তু চৌকো নয়, বরঞ্চ অষ্টভুজ,
কারন চারটে কোন একটু করে কাটা রয়েছে।
ভালো করে দেখলাম মিনারগুলো সামনে থেকে,
নিচে এসে দাঁড়ালে মাথা অব্দি ঠিকঠাক নজর যায় না এত উঁচু। মিনারগুলো একে অন্যের দিকে হালকা একটু হেলে আছে কারন যদি কখনো হয় ভূকম্পন, তাহলে যেন মিনার গিয়ে না পড়ে মূল গম্বুজে।
তবে একদম সামনে থেকে দেখলে বোঝা যায় তাজমহল ঠিক সাদা পাথর নয়, বরঞ্চ একটু হালকা হলদে ভাব আছে। জানিনা কেন এমন মনে হচ্ছে, হয়ত ধুলোর হালকা আস্তরনে এমন লাগছে।
এবার নেমে এসে একটা পাশে নিলাম একটা খালি চেয়ার, বাগানের ধারে। অসাধারণ সুন্দর লাগছে তাজমহল, এখানে বসে দেখতে।
তাজমহলের অন্য গল্প:
●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●
তাজমহল নিয়ে অনেক confusion আছে,
অনেকেই দাবী করেন এটা আসলে হিন্দু মন্দির,
মুঘলরা দখল করে নিজেদের সমাধি বানিয়েছে।
মান্ডুর কাছে দেখেছিলাম রাজা ভোজের তৈরি #ভোজেশ্বর_শিব_মন্দির বর্তমানে #হসাংশাহ_tomb।
রাজা ভোজের তৈরি অসাধারণ সেই সুন্দর শিব মন্দির শিল্প ও সৌন্দর্যের আকর।
সেটিও ধবধবে সাদা মার্বেলে তৈরি।
সেই সাদা স্বর্গীয় ভোজেশ্বর মন্দির
(তখন পরিবর্তিত হয়ে গেছে হসাংশাহ tombএ)
দেখেই শাহজাহান এই মহলটিকে অধিগ্রহণ করে তাজমহলে পরিনত করার কথা ভাবেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে।
সেই সময়ের মুঘলদের মধ্যে এক রীতি-রেওয়াজ চালু হয়ে গিয়েছিল দখলকৃত মন্দির, palace গুলিকে মসজিদ কবরখানায় রূপান্তরিত করা।
◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆
একে একে বলি কেন তাজমহলকে কেন হিন্দু মন্দিরের অধিগ্রহণ বলা হয় তার কারণগুলি:
#নামকরণ: তাজমহল নামটাই যথেষ্ট সন্দেহের। তাজ ই মহল নাম তাও আবার একটা কবরস্থানের,
অদ্ভূত লাগে।
যদিও কখনো শাহজাহান বা তার উত্তরসূরিরা এই নাম উচ্চারণ করেনি বরঞ্চ বলেছে #holy_grave।
আবার সেই সময়ের কিছু সংস্কৃত বইতে #তেজ_মহালয়া নামে অপূর্ব এক সাদা মন্দিরের উল্লেখ পাওয়া যায়,
যা যমুনা নদীর ধারে ছিল।
সেই মন্দির তাহলে গেল কোথায়?
তেজ মহালয়া থেকে তাজ মহল এটা একটা যুক্তিযুক্ত নাম অনুসরণ হতে পারে।
#ত্রিশূল: মূল ডোমের ঠিক উপরে দেখলে একটি ত্রিশূল দেখা যায় পরিস্কার। একদম উপরে ডাব তার নিচে দুইপাশে আমপাতা, তার নিচে ঘট, সেই ঘটের ঠিক নীচে চন্দ্র।
ভালো করে দেখুন সেই নকশা, সেই ঘটের নকশা যা প্রতিস্থাপন করা হয় যেকোন পুজোর আগে, ঠিক সেই ঘট পরিষ্কার দৃশ্যমান।
প্রসঙ্গত বলে রাখি
#ইসলামিক_চাঁদ একটু কোনাকুনি থাকে সবসময়
কিন্তু কখনো থাকে না অনুভূমিক।
এখানে চন্দ্র আছে অনুভূমিক।
#গঠনশৈলী: আসলে তাজমহল 7 তলার।
আমরা দেখতে পাই উপরের তিনটি তলা। একদম নীচে রয়েছে #যমুনা_দ্বার। আর সিঁড়ি উপরে উঠে এসেছে।
এটি সেই রাস্তা যা যমুনা নদী থেকে আসত তাজমহলে। বলা ভালো
রাস্তাটা আছে এখনো, শুধু দরজাটা বন্ধ করা আছে।
কার্বন টেস্ট করে জানা যায় এই দরজা প্রায় 300 বছরের বেশি পুরোন শাহজাহানের থেকে।
এত পুরোন দরজা তাজমহলে কেন?
তাহলে নিশ্চয় তাজমহল ছিল শাহজাহানের আগে থেকেই।
এছাড়া
এখানে রয়েছে #নহবৎখানা, যেখানে সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। সমস্ত মন্দিরেই সঙ্গীত পরিবেশিত হয় আর এখনো হয়।
কিন্তু কোন মসজিদ বা সমাধিতে সঙ্গীতের দরবার?
হুমায়ুন নিজের আত্মজীবনী'তে লিখেছেন
তেজ মহালয়া বলে এক মন্দিরের কথা, যমুনার ধারে।
যার সৌন্দর্য ওনাকে বিস্মিত করেছিল।
বাদশাহ_নামা তে শাহজাহান
স্বীকার করছেন যে আগ্রার এই প্রাসাদ মহারাজা জয় সিংহ এর কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে মুমতাজের কবরের জন্য। এই documentটি এখনো জয়পুরের মহারাজার নিজের সংগ্রহে রয়েছে বলে শোনা যায়।
এছাড়াও তাজমহল তৈরি করতে তাতে যত কর্মী লাগার কথা, এত কর্মী যদি ওখানে থাকতো আর থাকার খাবার জন্য যদি সব ব্যবস্থা সত্যিই করা হত তাহলে ঐ এলাকা তখন এক ব্যস্ত জনপদে পরিনত হত, কিন্তু পুরোন দস্তাবেজ ঘেঁটে এরম কোন ব্যস্ত জনপদের সন্ধান পাওয়া যায় নি তাজের আশেপাশে।
আরও মজার কথা তাজ নির্মাণের কোন শিল্পীদের বংশজ আজ অব্দি পাওয়া যায়নি।
মাত্র 400 বছর আগের মুঘলদের বংশজ এখনো রয়েছে কিন্তু শাহজাহান এর সময়ে তৈরি তাজ নির্মাণ কর্মীদের বংশজ'র কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি
তাজ নির্মাণের কোন অবশিষ্ট মার্বেল টুকরো।
এর আশেপাশে কোথাও বা কয়েক কিমি এর মধ্যে যা তাজের মার্বেলের সাথে মিল খায়।
এত বড় শিল্পকর্মের অবশিষ্ট কোথায় গেল, যদি সত্যি শাহজাহান এটা বানিয়ে থাকতো।
এছাড়া তাজমহল লেখা যে মার্বেল ফলক, সেটাও মিল খায় না তাজের বাকি মার্বেলের সাথে। তাজের মার্বেল অনেক উন্নত মানের ফলকের তুলনায়।
তাজের নিচে রয়েছে অনেক অনেক ঘর, সেগুলো সব বন্ধ করা রয়েছে।
কেন কি জন্য বন্ধ?
কি রয়েছে এই সব ঘরে?
এত বড় একটা শিল্পকর্ম কিন্তু তার #ব্লুপ্রিন্ট সহ ground work এর কোন কিছুই details পাওয়া যায় না।
না পাওয়া যায় সেই সময়ে আসা কোন ভ্রমনকারীদের বর্ননে কোন কিছু।
যেটুকু জানা যায়
মহারাজ জয় সিংহ বংশ পরম্পরায় পেয়েছিলেন এই তাজমহলের মালিকানা।
ওনার কাছ থেকে এই মহল কেড়ে নেন শাহজাহান।
তারপর সিঁড়ি সহ ভেতরের বেশ কিছু কাজ উনি বদলে দেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে।
এছাড়া এই সাদা তাজমহলের ঠিক পাশেই কালো তাজমহল তৈরির ইচ্ছে ছিল শাহজাহানের, কিন্তু সেটি আর বাস্তবরূপ পেয়ে ওঠেনি বলেই জানা যায়।
◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆
বর্তমান তাজমহলে বিভিন্ন জায়গায় #ওম #লাল_পদ্মফুল #ধুতুরাফুল #নাগ_নাগিন #কলস ইত্যাদির চিহ্ন আজও কিন্তু বলছে অনেক কথাই, কিন্তু আজকাল জীবন্ত মানুষের কথাই কেউ শুনছে না, সেখানে আবার শিল্পকর্ম এর চিহ্ন।
তবে বৃথা যায়না কিছুই, কালের কন্ঠ কে কবে চেপে রাখতে পেরেছে?
সত্য আসবেই সামনে।
তবে তাজমহল তাজমহলই।
সৌন্দর্য্য আর অনবদ্য গঠনশৈলী দুইদিকেই অপূর্ব। দেখতে দেখতে চোখ জুড়িয়ে যায়।
ঘোর লাগা এই স্বর্গীয় জগৎ থেকেআমরা যখন ফিরে এলাম তখন প্রায় সন্ধ্যে।
✍️ Prithwis Sen
বাস দাঁড়িয়ে গেল প্রায় 6 কিমি আগে
সেখান থেকে auto আর cng বাস নিয়ে গেল তাজমহলের গেট অব্দি। এবারে লম্বা লাইন আমরাও দাঁড়িয়ে গেলাম।
যেমন রোদ আছে তেমনি গরম, দুয়ে মিলে পুড়ে যাবার জোগাড়।
শেষে এল আমাদের security চেক।
কিছু খাবার ছিল ব্যাগে এই বিস্কুট চানাচুর। শুরু হল সমস্যা, এগুলো নিয়ে ভেতরে প্রবেশ নিষেধ। এখন আবার আরেকটা লাইনে দাঁড়িয়ে লকারে রেখে আসতে হবে এগুলো।
কি করা যায় এখন, দেখলাম কয়েকটা হনুমান রয়েছে দূরে...
ধুত্তোর নিকুচি করেছে, বলে প্যাকেট গুলো সামনে রেখে দিলাম ওদের। এসে নিয়ে গেল ওরা। সব সমস্যার শেষ।
ওয়াহ তাজ:
◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆
যাইহোক মূল গেট পেরুলাম
এবারে মূল চত্ত্বরে প্রবেশ ঘটল। মাঝে রাস্তা দুদিকে সবুজ লন। একটু এগোতেই বামদিকে প্রকাশ পেতে লাগল তাজমহল একটু একটু করে। প্রথমে পাশের মিনার গুলো আর তারপরে এল মূল কক্ষ, আর তারপরে পুরোটা।
একটা বাঁক নিলাম বামদিকে।
বাহ অদ্ভুত অপূর্ব...
বিস্ময়ে হতবাক করে দেয় এই সৌন্দর্য্য। অপূর্ব একখন্ড বিস্ময় যেন পৃথিবীতে নেমে এসেছে। এক টুকরো স্বর্গীয় পরিবেশ, মাঝখানে #যমুনা লম্বা হয়ে চলে গেছে তাজমহল অব্দি।
একদম ঠিক সামনে
বসার জায়গা। বসে পড়লাম।
ফটো তুলছে বহু লোকজন। দেশি বিদেশি পর্যটক ভর্তি।
কিন্তু ভ্রূক্ষেপ নেই আমার কারুর দিকে।
দেখছি অবাক বিস্ময়ে একমনে এই অদ্ভুত সৃষ্টি'কে।
সূর্য্যের পড়ন্ত দুপুরের আলোয়
সেই সাদা রূপ যেন ফেটে বেরুচ্ছে।
সামনের এই বেঞ্চের থেকে সরে যেতে যেন মন চাইছেই না।
মাঝের যমুনাকে পাশে রেখে
আমরা এগিয়ে গেলাম তাজমহলের দিকে। যত এগোচ্ছি তত যেন সুন্দর হচ্ছে এই তাজমহল।
সামনের পর পর লম্বা শ্বেত শুভ্র সিঁড়ির কাছে চলে এলাম। এবারে ওঠার পালা।
উঠে এসে একবার চারপাশ দেখলাম, আহা কি দুর্দান্ত। যেমন সাজানো বাগান চারিদিকে আর গেটগুলি, মাঝে লম্বা করে যমুনা। যেদিকে তাকাই চোখ সরানো মুশকিল। সিঁড়ি দিয়ে উঠতেই সামনের বড় বারান্দায় এদিক থেকে ওদিক হেঁটে একবার দেখে নিলাম মূল কক্ষের সামনেটা।
মূল কক্ষে ভীড় কমেছে
এবারে ওখানে যাই। বেশ সাজানো কক্ষ নিচে, দুটি বাক্স পরপর। এগুলো কবর মমতাজ শাজাহানের।
উপরে জাফরির কাজ করা সেখান থেকে আলো আসছে।
উপরে বেশ একটা গোল নকশা, দেখলে এক ঝটকায় সূর্যচিহ্নের মতোই লাগে। আলো আসছে ওই জায়গা দিয়ে।
দুইটি বাক্স। কবরের উপরি ভাগটা শুধু দেখা যায়।
যেগুলো শুধুই বাক্স, আসল কবর রয়েছে নিচের ঘরে।
কিন্তু
সেই কবরকে ঘিরে রয়েছে উপরে পরিক্রমা ব্যালকনি, কেন এই ব্যালকনি?
কবর ঘিরে ব্যালকনি... অদ্ভুত
বেরিয়ে এসে মিনার গুলোর কাছে গিয়ে বসলাম। অনেকে প্রাচীরের উপরে উঠে যমুনা দেখছে।
যমুনার ওদিক থেকে আরেকটি গেট রয়েছে,
যদিও সেটি এখন বন্ধ থাকে।
তাজমহল যেদিকে থেকে দেখবেন
সেদিক থেকেই এটি একইরকম দেখাবে।
কিন্তু চৌকো নয়, বরঞ্চ অষ্টভুজ,
কারন চারটে কোন একটু করে কাটা রয়েছে।
ভালো করে দেখলাম মিনারগুলো সামনে থেকে,
নিচে এসে দাঁড়ালে মাথা অব্দি ঠিকঠাক নজর যায় না এত উঁচু। মিনারগুলো একে অন্যের দিকে হালকা একটু হেলে আছে কারন যদি কখনো হয় ভূকম্পন, তাহলে যেন মিনার গিয়ে না পড়ে মূল গম্বুজে।
তবে একদম সামনে থেকে দেখলে বোঝা যায় তাজমহল ঠিক সাদা পাথর নয়, বরঞ্চ একটু হালকা হলদে ভাব আছে। জানিনা কেন এমন মনে হচ্ছে, হয়ত ধুলোর হালকা আস্তরনে এমন লাগছে।
এবার নেমে এসে একটা পাশে নিলাম একটা খালি চেয়ার, বাগানের ধারে। অসাধারণ সুন্দর লাগছে তাজমহল, এখানে বসে দেখতে।
তাজমহলের অন্য গল্প:
●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●
তাজমহল নিয়ে অনেক confusion আছে,
অনেকেই দাবী করেন এটা আসলে হিন্দু মন্দির,
মুঘলরা দখল করে নিজেদের সমাধি বানিয়েছে।
মান্ডুর কাছে দেখেছিলাম রাজা ভোজের তৈরি #ভোজেশ্বর_শিব_মন্দির বর্তমানে #হসাংশাহ_tomb।
রাজা ভোজের তৈরি অসাধারণ সেই সুন্দর শিব মন্দির শিল্প ও সৌন্দর্যের আকর।
সেটিও ধবধবে সাদা মার্বেলে তৈরি।
সেই সাদা স্বর্গীয় ভোজেশ্বর মন্দির
(তখন পরিবর্তিত হয়ে গেছে হসাংশাহ tombএ)
দেখেই শাহজাহান এই মহলটিকে অধিগ্রহণ করে তাজমহলে পরিনত করার কথা ভাবেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে।
সেই সময়ের মুঘলদের মধ্যে এক রীতি-রেওয়াজ চালু হয়ে গিয়েছিল দখলকৃত মন্দির, palace গুলিকে মসজিদ কবরখানায় রূপান্তরিত করা।
◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆
একে একে বলি কেন তাজমহলকে কেন হিন্দু মন্দিরের অধিগ্রহণ বলা হয় তার কারণগুলি:
#নামকরণ: তাজমহল নামটাই যথেষ্ট সন্দেহের। তাজ ই মহল নাম তাও আবার একটা কবরস্থানের,
অদ্ভূত লাগে।
যদিও কখনো শাহজাহান বা তার উত্তরসূরিরা এই নাম উচ্চারণ করেনি বরঞ্চ বলেছে #holy_grave।
আবার সেই সময়ের কিছু সংস্কৃত বইতে #তেজ_মহালয়া নামে অপূর্ব এক সাদা মন্দিরের উল্লেখ পাওয়া যায়,
যা যমুনা নদীর ধারে ছিল।
সেই মন্দির তাহলে গেল কোথায়?
তেজ মহালয়া থেকে তাজ মহল এটা একটা যুক্তিযুক্ত নাম অনুসরণ হতে পারে।
#ত্রিশূল: মূল ডোমের ঠিক উপরে দেখলে একটি ত্রিশূল দেখা যায় পরিস্কার। একদম উপরে ডাব তার নিচে দুইপাশে আমপাতা, তার নিচে ঘট, সেই ঘটের ঠিক নীচে চন্দ্র।
ভালো করে দেখুন সেই নকশা, সেই ঘটের নকশা যা প্রতিস্থাপন করা হয় যেকোন পুজোর আগে, ঠিক সেই ঘট পরিষ্কার দৃশ্যমান।
প্রসঙ্গত বলে রাখি
#ইসলামিক_চাঁদ একটু কোনাকুনি থাকে সবসময়
কিন্তু কখনো থাকে না অনুভূমিক।
এখানে চন্দ্র আছে অনুভূমিক।
#গঠনশৈলী: আসলে তাজমহল 7 তলার।
আমরা দেখতে পাই উপরের তিনটি তলা। একদম নীচে রয়েছে #যমুনা_দ্বার। আর সিঁড়ি উপরে উঠে এসেছে।
এটি সেই রাস্তা যা যমুনা নদী থেকে আসত তাজমহলে। বলা ভালো
রাস্তাটা আছে এখনো, শুধু দরজাটা বন্ধ করা আছে।
কার্বন টেস্ট করে জানা যায় এই দরজা প্রায় 300 বছরের বেশি পুরোন শাহজাহানের থেকে।
এত পুরোন দরজা তাজমহলে কেন?
তাহলে নিশ্চয় তাজমহল ছিল শাহজাহানের আগে থেকেই।
এছাড়া
এখানে রয়েছে #নহবৎখানা, যেখানে সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। সমস্ত মন্দিরেই সঙ্গীত পরিবেশিত হয় আর এখনো হয়।
কিন্তু কোন মসজিদ বা সমাধিতে সঙ্গীতের দরবার?
হুমায়ুন নিজের আত্মজীবনী'তে লিখেছেন
তেজ মহালয়া বলে এক মন্দিরের কথা, যমুনার ধারে।
যার সৌন্দর্য ওনাকে বিস্মিত করেছিল।
বাদশাহ_নামা তে শাহজাহান
স্বীকার করছেন যে আগ্রার এই প্রাসাদ মহারাজা জয় সিংহ এর কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে মুমতাজের কবরের জন্য। এই documentটি এখনো জয়পুরের মহারাজার নিজের সংগ্রহে রয়েছে বলে শোনা যায়।
এছাড়াও তাজমহল তৈরি করতে তাতে যত কর্মী লাগার কথা, এত কর্মী যদি ওখানে থাকতো আর থাকার খাবার জন্য যদি সব ব্যবস্থা সত্যিই করা হত তাহলে ঐ এলাকা তখন এক ব্যস্ত জনপদে পরিনত হত, কিন্তু পুরোন দস্তাবেজ ঘেঁটে এরম কোন ব্যস্ত জনপদের সন্ধান পাওয়া যায় নি তাজের আশেপাশে।
আরও মজার কথা তাজ নির্মাণের কোন শিল্পীদের বংশজ আজ অব্দি পাওয়া যায়নি।
মাত্র 400 বছর আগের মুঘলদের বংশজ এখনো রয়েছে কিন্তু শাহজাহান এর সময়ে তৈরি তাজ নির্মাণ কর্মীদের বংশজ'র কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি
তাজ নির্মাণের কোন অবশিষ্ট মার্বেল টুকরো।
এর আশেপাশে কোথাও বা কয়েক কিমি এর মধ্যে যা তাজের মার্বেলের সাথে মিল খায়।
এত বড় শিল্পকর্মের অবশিষ্ট কোথায় গেল, যদি সত্যি শাহজাহান এটা বানিয়ে থাকতো।
এছাড়া তাজমহল লেখা যে মার্বেল ফলক, সেটাও মিল খায় না তাজের বাকি মার্বেলের সাথে। তাজের মার্বেল অনেক উন্নত মানের ফলকের তুলনায়।
তাজের নিচে রয়েছে অনেক অনেক ঘর, সেগুলো সব বন্ধ করা রয়েছে।
কেন কি জন্য বন্ধ?
কি রয়েছে এই সব ঘরে?
এত বড় একটা শিল্পকর্ম কিন্তু তার #ব্লুপ্রিন্ট সহ ground work এর কোন কিছুই details পাওয়া যায় না।
না পাওয়া যায় সেই সময়ে আসা কোন ভ্রমনকারীদের বর্ননে কোন কিছু।
যেটুকু জানা যায়
মহারাজ জয় সিংহ বংশ পরম্পরায় পেয়েছিলেন এই তাজমহলের মালিকানা।
ওনার কাছ থেকে এই মহল কেড়ে নেন শাহজাহান।
তারপর সিঁড়ি সহ ভেতরের বেশ কিছু কাজ উনি বদলে দেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে।
এছাড়া এই সাদা তাজমহলের ঠিক পাশেই কালো তাজমহল তৈরির ইচ্ছে ছিল শাহজাহানের, কিন্তু সেটি আর বাস্তবরূপ পেয়ে ওঠেনি বলেই জানা যায়।
◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆
বর্তমান তাজমহলে বিভিন্ন জায়গায় #ওম #লাল_পদ্মফুল #ধুতুরাফুল #নাগ_নাগিন #কলস ইত্যাদির চিহ্ন আজও কিন্তু বলছে অনেক কথাই, কিন্তু আজকাল জীবন্ত মানুষের কথাই কেউ শুনছে না, সেখানে আবার শিল্পকর্ম এর চিহ্ন।
তবে বৃথা যায়না কিছুই, কালের কন্ঠ কে কবে চেপে রাখতে পেরেছে?
সত্য আসবেই সামনে।
তবে তাজমহল তাজমহলই।
সৌন্দর্য্য আর অনবদ্য গঠনশৈলী দুইদিকেই অপূর্ব। দেখতে দেখতে চোখ জুড়িয়ে যায়।
ঘোর লাগা এই স্বর্গীয় জগৎ থেকেআমরা যখন ফিরে এলাম তখন প্রায় সন্ধ্যে।
✍️ Prithwis Sen

